হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের ওয়াকফ আইন ভারতের মুসলিম জনগণের উপর নতুন খড়গ

হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের ওয়াকফ আইন ভারতের মুসলিম জনগণের উপর নতুন খড়গ
আন্দোলন প্রতিবেদন
রবিবার, ১১ মে ২০২৫ | অনলাইন সংস্করণ
ভারতের হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্ট মোদির সরকার মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পত্তির ওয়াকফ আইন সংশোধন করে বিল উত্থাপন করে আগস্ট ২০২৪-এ। এই বিলটি বহু বিতর্কের পর ২ এপ্রিল’২৫ ভারতের পার্লামেন্টের লোকসভার নিম্নকক্ষে ও পরদিন রাজ্যসভার উচ্চকক্ষে পাস হয়। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর্ বিলটিতে তার সম্মতি দিলে এটি ভারতের একটি আইনে পরিণত হয়। বিলটি উত্থাপনের পর কংগ্রেসসহ বিরোধী জোট এর বিরোধিতা করে বলে যে, বিলটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর উপর আঘাত। এর মাধ্যমে সরকার সংবিধান দুর্বল, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মর্যাদাহানি, ভারতীয় সমাজকে বিভক্ত ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোটাধিকার বঞ্চিত করতে চায়। অন্যদিকে বিল পাসের ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে মন্তব্য করে হিন্দুত্ববাদী নরেন্দ্র মোদি। মোদি বলে, এটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপকারে আসবে, যারা নিজেদের চাওয়া ও সুবিধা উভয় থেকেই বঞ্চিত। ওয়াক্ফ সম্পত্তি পরিচালনা পদ্ধতিকে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করে তুলতে এই আইনটি প্রণয়ন করা দারকার ছিল বলেও তার মন্তব্য।
ওয়াকফ সম্পত্তি হচ্ছে মুসলিম আইনে স্বীকৃত একটি স্থায়ী উৎসর্গ, যেখানে অস্থাবর বা স্থাবর সম্পত্তি ধর্মীয় উদ্দেশ্যে দান করা হয় (ভারতের হিন্দু সমাজে যেটা ‘দেবোত্তর সম্পত্তি’ বলে গণ্য)। যা মসজিদ-মাদ্রাসা এবং এতিমখানা, কবরস্থান-এর সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। এই সম্পত্তি পরিচালিত হয় ওয়াকফ বোর্ড দ্বারা। ওয়াকফ বোর্ড প্রশাসনিক কার্যক্রমে পরামর্শক হিসেবে কাজ করে। ভারতে ওয়াক্ফ আইন প্রথম পাস হয় ১৯৫৪ সালে এবং ১৯৯৫ সালে সেটি সংশোধন করে ওয়াক্ফ বোর্ডের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। সেই থেকে বিজেপি’র অভিযোগ, বিপুল ওয়াক্ফ সম্পত্তি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ভোগ করছে, অবৈধ জমি দখলে ওয়াক্ফ সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দুর্নীতি হচ্ছে– ইত্যাদি। এই অভিযোগে ওয়াক্ফ আইন পরিবর্তন করে মোদি সরকার।
ভারতে ওয়াক্ফ জমির পরিমাণ ৯,৪০,০০০ একর। যার মূল্য এক/দেড় লক্ষ কোটি টাকা। এই সম্পদ মুসলিম শাসক ও ব্যক্তিদের দানের মাধ্যমে হয়েছে। মমতাজমহলও এই ওয়াকফ সম্পত্তিরই অংশ।
ওয়াক্ফ আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো হলো– এখানে একজন অমুসলিমকে ওয়াক্ফ বোর্ডের প্রধান নির্বাহিী কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিতর্কিত ধারা অনুযায়ী রাজ্যগুলোর ওয়াক্ফ বোর্ডে নিজ নিজ রাজ্য সরকার অন্তত দুজন অমুসলিমকে নিয়োগ দিতে পারবে। একজন জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিতর্কিত সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ হিসেবে নির্ধারণ বা সরকারের মালিকানায় হস্তান্তরের ক্ষমতা পাবে। ওয়াক্ফ’র পুরানো আইন অনুযায়ী, কোনো সম্পত্তি ওয়াক্ফ ঘোষণার একমাত্র অধিকারী ছিল ওয়াক্ফ বোর্ড। নতুন আইনে সেই অধিকার দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক বা সম-পদমর্যাদার কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে। ঐতিহাসিকভাবে ভারতের ওয়াক্ফ জমিজমা এতকাল আইনগতভাবে বৈধ ওয়াক্ফ সম্পত্তি বলে স্বীকৃতি পেয়ে এসেছে। যেগুলো হয়তো শুধু মুখের কথায় বা সামাজিক রীতিনীতি মেনে দান করা হয়েছিল। নতুন আইনে কোনো সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ হিসেবে দাবি করতে হলে সংশ্লিষ্ট ওয়াকফ বোর্ডকে তার সপক্ষে বৈধ নথিপত্র জমা দিতে হবে। যদি সেই জমিটা সরকারি মালিকানাধীন খাস-জমি বলে দাবি থাকে– সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। নতুন আইনে সব ওয়াক্ফ সম্পত্তির জন্য একটি ‘সেন্ট্রালাইজড রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম’ গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে– আইনটি বলবৎ হওয়ার ছ’মাসের মধ্যে সব বিদ্যমান ওয়াকফ সম্পত্তিকে ওই রেজিস্টারের নথিভুক্ত করতে হবে।
ওয়াক্ফ বিল পাস হতে না হতেই সুপ্রিম কোর্টে এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মুসলিম সংগঠন। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড জানিয়েছে এই আইনের বিরুদ্ধে তারা দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করবে। ইতিমধ্যে দেশের পশ্চিমবঙ্গ, মণিপুরসহ বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে অন্তত ১৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত ইতিমধ্যে শুনানি শুরু করেছে এবং এই আইন কার্যকর করতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করার চিন্তা করছে।
১৯৯৫ সাল থেকেই বিজেপি’র চোখ পড়েছে এই বিশাল সম্পত্তির উপর। তারা ওয়াক্ফ সম্পত্তি দখলে নিতেই এই আইন করেছে। এ কারণে সরকার গোটা দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার কোটি টাকা মূল্যের যাবতীয় ওয়াক্ফ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করার পুরো পদ্ধতি বদলে ফেলতে চায়। মোদি সরকারের উদ্দেশ্য সংস্কার নয়– বরং সংসদের গরিষ্ঠতা ব্যবহার করে মুসলিমদের সম্পত্তি ছিনিয়ে নেয়া এবং কুক্ষিগত করা। হিন্দুত্ববাদী মোদি এর আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে রামমন্দির নির্মাণ করেছে। এখন আওরঙ্গজেবের সমাধি ভাঙাসহ বহু হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করে নিজের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার অপচেষ্টা করছে। এই আইন এবং মুসলিম বিরোধী কার্মকাণ্ড ভারত-বাংলাদেশ জুড়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করতে পারে।
বিরোধী বুর্জোয়া দলগুলো যে এই নতুন আইনের বিরোধিতা করছে তাতে যতটা মুসলিম জনগণের ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা, তার চেয়ে ভোটের রাজনীতির হিসাব-নিকাশই বেশি। সেই হিসেবে বিজেপি’র এনডিএ জোটও পিছিয়ে নেই। মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেছে, ‘পাকা পয়েন্ট পশ্চিবঙ্গে চালু হবে না’। মুসলিমদের ওয়াক্ফ জবর-দখল করাই এর উদ্দেশ্য; দুর্নীতি এবং বিশেষ গোষ্ঠীর ভোগদখল মুক্ত করা নয়, তা যে কোনো সচেতন ব্যক্তিই বুঝেন। কিন্তু হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তির ক্ষেত্রে কেন একই আইন করা হচ্ছে না? তাদের চক্রান্ত যে মুসলিমদের সম্পত্তি দখল, তা না বুঝার কোনো কারণ নেই।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সম্পত্তিতে দুর্নীতি, বিশেষ গোষ্ঠীর ভোগদখল মুক্ত করতে হলে প্রান্তিক জনগণ তথা সাধারণ জনগণকে সাম্প্রদায়িক মুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে হিন্দু-মুসলিম শাসকশ্রেণির বিরুদ্ধে বিপ্লবী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
– ১৭ এপ্রিল, ২০২৫
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের ওয়াকফ আইন ভারতের মুসলিম জনগণের উপর নতুন খড়গ
ভারতের হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্ট মোদির সরকার মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পত্তির ওয়াকফ আইন সংশোধন করে বিল উত্থাপন করে আগস্ট ২০২৪-এ। এই বিলটি বহু বিতর্কের পর ২ এপ্রিল’২৫ ভারতের পার্লামেন্টের লোকসভার নিম্নকক্ষে ও পরদিন রাজ্যসভার উচ্চকক্ষে পাস হয়। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর্ বিলটিতে তার সম্মতি দিলে এটি ভারতের একটি আইনে পরিণত হয়। বিলটি উত্থাপনের পর কংগ্রেসসহ বিরোধী জোট এর বিরোধিতা করে বলে যে, বিলটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর উপর আঘাত। এর মাধ্যমে সরকার সংবিধান দুর্বল, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মর্যাদাহানি, ভারতীয় সমাজকে বিভক্ত ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোটাধিকার বঞ্চিত করতে চায়। অন্যদিকে বিল পাসের ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে মন্তব্য করে হিন্দুত্ববাদী নরেন্দ্র মোদি। মোদি বলে, এটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপকারে আসবে, যারা নিজেদের চাওয়া ও সুবিধা উভয় থেকেই বঞ্চিত। ওয়াক্ফ সম্পত্তি পরিচালনা পদ্ধতিকে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করে তুলতে এই আইনটি প্রণয়ন করা দারকার ছিল বলেও তার মন্তব্য।
ওয়াকফ সম্পত্তি হচ্ছে মুসলিম আইনে স্বীকৃত একটি স্থায়ী উৎসর্গ, যেখানে অস্থাবর বা স্থাবর সম্পত্তি ধর্মীয় উদ্দেশ্যে দান করা হয় (ভারতের হিন্দু সমাজে যেটা ‘দেবোত্তর সম্পত্তি’ বলে গণ্য)। যা মসজিদ-মাদ্রাসা এবং এতিমখানা, কবরস্থান-এর সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। এই সম্পত্তি পরিচালিত হয় ওয়াকফ বোর্ড দ্বারা। ওয়াকফ বোর্ড প্রশাসনিক কার্যক্রমে পরামর্শক হিসেবে কাজ করে। ভারতে ওয়াক্ফ আইন প্রথম পাস হয় ১৯৫৪ সালে এবং ১৯৯৫ সালে সেটি সংশোধন করে ওয়াক্ফ বোর্ডের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। সেই থেকে বিজেপি’র অভিযোগ, বিপুল ওয়াক্ফ সম্পত্তি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ভোগ করছে, অবৈধ জমি দখলে ওয়াক্ফ সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দুর্নীতি হচ্ছে– ইত্যাদি। এই অভিযোগে ওয়াক্ফ আইন পরিবর্তন করে মোদি সরকার।
ভারতে ওয়াক্ফ জমির পরিমাণ ৯,৪০,০০০ একর। যার মূল্য এক/দেড় লক্ষ কোটি টাকা। এই সম্পদ মুসলিম শাসক ও ব্যক্তিদের দানের মাধ্যমে হয়েছে। মমতাজমহলও এই ওয়াকফ সম্পত্তিরই অংশ।
ওয়াক্ফ আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো হলো– এখানে একজন অমুসলিমকে ওয়াক্ফ বোর্ডের প্রধান নির্বাহিী কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিতর্কিত ধারা অনুযায়ী রাজ্যগুলোর ওয়াক্ফ বোর্ডে নিজ নিজ রাজ্য সরকার অন্তত দুজন অমুসলিমকে নিয়োগ দিতে পারবে। একজন জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিতর্কিত সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ হিসেবে নির্ধারণ বা সরকারের মালিকানায় হস্তান্তরের ক্ষমতা পাবে। ওয়াক্ফ’র পুরানো আইন অনুযায়ী, কোনো সম্পত্তি ওয়াক্ফ ঘোষণার একমাত্র অধিকারী ছিল ওয়াক্ফ বোর্ড। নতুন আইনে সেই অধিকার দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক বা সম-পদমর্যাদার কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে। ঐতিহাসিকভাবে ভারতের ওয়াক্ফ জমিজমা এতকাল আইনগতভাবে বৈধ ওয়াক্ফ সম্পত্তি বলে স্বীকৃতি পেয়ে এসেছে। যেগুলো হয়তো শুধু মুখের কথায় বা সামাজিক রীতিনীতি মেনে দান করা হয়েছিল। নতুন আইনে কোনো সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ হিসেবে দাবি করতে হলে সংশ্লিষ্ট ওয়াকফ বোর্ডকে তার সপক্ষে বৈধ নথিপত্র জমা দিতে হবে। যদি সেই জমিটা সরকারি মালিকানাধীন খাস-জমি বলে দাবি থাকে– সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। নতুন আইনে সব ওয়াক্ফ সম্পত্তির জন্য একটি ‘সেন্ট্রালাইজড রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম’ গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে– আইনটি বলবৎ হওয়ার ছ’মাসের মধ্যে সব বিদ্যমান ওয়াকফ সম্পত্তিকে ওই রেজিস্টারের নথিভুক্ত করতে হবে।
ওয়াক্ফ বিল পাস হতে না হতেই সুপ্রিম কোর্টে এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মুসলিম সংগঠন। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড জানিয়েছে এই আইনের বিরুদ্ধে তারা দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করবে। ইতিমধ্যে দেশের পশ্চিমবঙ্গ, মণিপুরসহ বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে অন্তত ১৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত ইতিমধ্যে শুনানি শুরু করেছে এবং এই আইন কার্যকর করতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করার চিন্তা করছে।
১৯৯৫ সাল থেকেই বিজেপি’র চোখ পড়েছে এই বিশাল সম্পত্তির উপর। তারা ওয়াক্ফ সম্পত্তি দখলে নিতেই এই আইন করেছে। এ কারণে সরকার গোটা দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার কোটি টাকা মূল্যের যাবতীয় ওয়াক্ফ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করার পুরো পদ্ধতি বদলে ফেলতে চায়। মোদি সরকারের উদ্দেশ্য সংস্কার নয়– বরং সংসদের গরিষ্ঠতা ব্যবহার করে মুসলিমদের সম্পত্তি ছিনিয়ে নেয়া এবং কুক্ষিগত করা। হিন্দুত্ববাদী মোদি এর আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে রামমন্দির নির্মাণ করেছে। এখন আওরঙ্গজেবের সমাধি ভাঙাসহ বহু হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করে নিজের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার অপচেষ্টা করছে। এই আইন এবং মুসলিম বিরোধী কার্মকাণ্ড ভারত-বাংলাদেশ জুড়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করতে পারে।
বিরোধী বুর্জোয়া দলগুলো যে এই নতুন আইনের বিরোধিতা করছে তাতে যতটা মুসলিম জনগণের ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা, তার চেয়ে ভোটের রাজনীতির হিসাব-নিকাশই বেশি। সেই হিসেবে বিজেপি’র এনডিএ জোটও পিছিয়ে নেই। মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেছে, ‘পাকা পয়েন্ট পশ্চিবঙ্গে চালু হবে না’। মুসলিমদের ওয়াক্ফ জবর-দখল করাই এর উদ্দেশ্য; দুর্নীতি এবং বিশেষ গোষ্ঠীর ভোগদখল মুক্ত করা নয়, তা যে কোনো সচেতন ব্যক্তিই বুঝেন। কিন্তু হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তির ক্ষেত্রে কেন একই আইন করা হচ্ছে না? তাদের চক্রান্ত যে মুসলিমদের সম্পত্তি দখল, তা না বুঝার কোনো কারণ নেই।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সম্পত্তিতে দুর্নীতি, বিশেষ গোষ্ঠীর ভোগদখল মুক্ত করতে হলে প্রান্তিক জনগণ তথা সাধারণ জনগণকে সাম্প্রদায়িক মুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে হিন্দু-মুসলিম শাসকশ্রেণির বিরুদ্ধে বিপ্লবী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
– ১৭ এপ্রিল, ২০২৫
আরও খবর
- শনি
- রোব
- সোম
- মঙ্গল
- বুধ
- বৃহ
- শুক্র